দুনিয়াটা প্রতিনিয়ত আরো বেশি বেশি ডিজিটাল প্রযুক্তির দিকে সরে যাওয়ার সাথে সাথে আরো বেশি বেশি পাঠকরা ই-বুকের সুবিধা ও বহনযোগ্যতা উপভোগ করতে শুরু করেছে। এই ঘটনা স্ব-প্রকাশণী ব্যবসাকে অনেক সাহায্য করছে, যেহেতু অনেক বিখ্যাত লেখকরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে তাদের বইগুল পাঠকদের কাছে পোঁছে দেওয়ার সহজ ও দ্রুত পদ্ধতির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। চিরাচরিত প্রকাশনী বইয়ের প্রধান উৎস হলেও, স্ব-প্রকাশণী খুব দ্রুত বেড়ে উঠেছে। স্ব-প্রকাশণীর মাধ্যমে বই প্রকাশের কয়েকটি প্রধান সুবিধা হল:
২। ভাল অর্থপ্রদান ব্যবস্থা
বিখ্যাত ই-বুক মাধ্যম যেমন: আমাজন কিনডেল, কোবো, স্মাসওয়ার্ডস ইত্যাদিতে স্ব-প্রকাশণী অনেক উচ্চ রয়্যালটির হার প্রদান করে থাকে চিরাচরিত প্রকাশকদের থেকে যারা মাত্র ৬ শতাংশ এর মত কম রয়্যালটি প্রদান করে থাকে। সাধারণত, লেখকরা চিরাচরিত প্রকাশকদের থেকে যে রয়্যালটি পেয়ে থাকে তা মুল আয়ের ১০-২০ শতাংশ এর মধ্যে হয়ে থাকে, যেখানে আমাজন কিনডেল ৭০ শতাংশ পর্যন্ত রয়্যালটি প্রদান করে থাকে। অন্যান্য স্ব-প্রকাশণী মাধ্যমও তুলনামূলক রেট প্রদান করে থাকে যেমন: অ্যাপেল ৫৫ শতাংশ, বারনেস ও নোবেল ৬৫ শতাংশ।
আবার, চিরাচরিত প্রকাশকদের সাথে, রয়্যালটির টাকা, তুমি তোমার অগ্রিম অর্জন করার পরে বছরে দুইবার প্রদান করা হয়ে থাকে। অপরদিকে, তুমি স্ব-প্রকাশণীর মাধ্যমে প্রতি মাসে রয়্যালটির টাকা পেতে পারো আমাজন অথবা অন্য কোন স্থানে পাবলিশ করে।
২। দালালকে বাদ দেও
স্ব-প্রকাশণীর ও ই-বুকের আবির্ভাবের মাধ্যমে, তুমি কোন প্রকাশকের সাহায্য ছাড়াই তোমার বই পাঠকের হাতে পোঁছে দিতে পারো। তুমি চিরাচরিত প্রকাশকদের সম্পূর্ণভাবে বাদ দিতে পার এবং কি ও কখন তুমি পাবলিশ করছ, তা পুরাপুরি নিয়ন্তন করতে পারো। এছাড়াও, জিজ্ঞাসা পত্র, বই প্রস্তাব, উপস্থাপন প্যাকেজ, পরিদর্শক ও প্রকাশক এবং চিরাচরিত প্রকাশণীর সাথে জ্বরিত অন্যান্য ঝামেলার পেছনে সময় ও শ্রম ব্যায় করার কোন দরকার হয় না।
৩। সৃজনশীল নিয়ন্ত্রণ
চিরাচরিত প্রকাশণীতে সম্পাদনা, কভার আর্ট, বাজারজাতকরণ ও বাকি সবকিছু প্রকাশকদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে, এবং লেখকদের সাথে এই ব্যাপারে খুব কমই পরামর্শ করা হয়ে থাকে। অনেকের কাছে এটি সুবিধা মনে হলেও, এটি অনেক লেখকের জন্য চিন্তার উৎস হয়ে ওঠে, কারণ তারা তাদের বইয়ের সকল বিষয়ের উপরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। স্ব-প্রকাশণীতে তোমাকে এই সব সেবার জন্য নিজের পকেট থেকে পয়সা করছ করতে হবে, কিন্তু কমপক্ষে তোমার বই, কভার, বিন্যাস, ই-বুকটির দাম ছাড়াও বাজারজাতকরণ ও প্রচার কাজ ইত্যাদি জিনিসের উপরে তোমার সৃজনশীল নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
৪। অনন্ত শেল্ফ জীবন
তোমার ই-বুক একবার ডিজিটাল জগৎ-এ একবার মুক্তি পেলে সেটি সেখানে তত দিন ধরে থাকতে পারে, যত দিন তুমি চাও। এটা তোমার বইকে ধরে উঠতে, রিভিউ পেতে, স্বীকৃ্তি পেতে ও অর্থ লাভ করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় প্রদান করে। বইয়ের কাগজের সংস্করণ যা দোকানের শেল্ফে মাত্র কয়েক মাস থাকে, ই-বুক তার তুলনায় আজীবন থাকতে পারে। কাজেই, তুমি নিজেকে একজন লেখক হিসেবে স্তাপন করতে ই-বুক মার্কেটে অনেক সময় পাবে চিরাচরিত প্রকাশণা বাজারের তুলনায়, যেখানে শুধু চেনা-পরিচিত লেখকরাই ক্রমাগত খুব কম শেল্ফ লাইফ সময়ে মধ্যে তাদের বই প্রকাশ করে।
৫। সহজ এবং দ্রুত
স্ব-প্রকাশণীর সাহায্যে তুমি লেখা ও সম্পাদনা শেষ করার সাথে সাথে যখন ইচ্ছা হবে ঠিক তখনই তোমার বই পাবলিশ করতে পারো। শুধু একটি উজার অ্যাকাউন্ট বানানো ও ই-বুক ওয়েবসাইটটিতে আপলোড করার মতই সোজা। তুমি চাইলে স্ব-প্রকাশণী ওয়েবসাইটগুলো থেকে পূর্ব-প্রস্তুত করা কভারও বেঁছে নিতে পারো।
চিরাচরিত প্রকাশণীতে তোমার বই পাবলিশের জন্য গ্রহণ হবার পর সেটি শেল্ফে দেখা দিতে প্রায় ১.৫ বছর লাগতে পারে, এবং সেটা তোমার বইটি গ্রহণ করানোর জন্য এজেন্টদের ও প্রকাশণীর পেছনে চক্কর কেটে যে সময় ব্যায় করতে হবে, তা বাদ দিয়ে গণনা করে।
Image credit: mobilyazilar on flickr and reproduced under Creative Commons 2.0[author] [author_image timthumb=’on’]https://writingtipsoasis.com/wp-content/uploads/2014/02/CS_Rajan.jpg [/author_image] [author_info]CS Rajan is a freelance writer who loves to write on various topics, and is currently working on her first novel. [/author_info] [/author]